ফরেক্স মার্কেট পূর্বাভাস

Saturday, December 31, 2016

টেকনিকাল এনালাইসিস কি?

ফরেক্স ট্রেডিং স্কুল 
Lesson -8 
What is technical analysis?
টেকনিকাল এনালাইসিস কি?

প্রথমে আপনি যদি কোন ফরেক্সের কারেন্সি পেয়ারের চার্ট দেখে থাকেন বা খেয়াল করে থাকবেন প্রাইস মুভমেন্টে সবসময় একটা আপট্রেন্ড/ডাউনট্রেন্ড থাকে। ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসে আমরা দেখেছিলাম একটা দেশের বিভিন্ন ইকোনমিক ইনডিকেটরের উপর নির্ভর করে ট্রেডাররা ট্রেড করে থাকে। টেকনিকাল এনালিস্টরা অতিতের মার্কেট ট্রেন্ড দেখে বর্তমান প্রাইস মুভমেন্টে স্টাডি করে ফিউচার মার্কেট ট্রেন্ড প্রেডিকশন করার চেষ্টা করে। ইংরেজিতে আপনি একটা কথা শুনে থাকবেন History tends to repeat itself  অর্থাৎ ইতিহাস বার বার প্রতিফলিত হয়।  টেকনিকাল এনালাইসিসের উপর ভিত্তি করেই ট্রেড করা হয়। আমরা আশা করতে পারি পূর্বে যা ঘটেছিল ভবিষ্যতে ও তাই ঘটতে পারে সাধারণত টেকনিকাল এনালাইসিসে যা হয় একটি সাপোর্ট ও একটি রেসিস্টেন্স লেবেল ক্রস করে এবং এর উপর ভিত্তি করেই ট্রেডিং করে থাকে। এই সাপোর্ট ও রেসিস্টেন্স লাইন কথাটা মনের ভিতর গেঁথে ফেলেন কারন আপনি স্টক মার্কেটও ট্রেড করলে এই কনসেপ্ট আপনাকে কাজে দেবে। যেখানে ধরে নেওয়া হয় যে প্রাইস দুটি নির্দিষ্ট লাইন বা লেভেলের ভিতর যে কোন একটিতে টাচ করলে রিভার্স করবে এবং তার বিপরীত দিকে ফেরত আসবে। অর্থাৎ এর ভিতরে উঠানামা করবে। কিন্তু একেকজন একেকভাবে সাপোর্ট ও রেসিস্টেন্স লেবেল ব্যবহার করে থাকে। যাইহোক টেকনিকাল এনালাইসিসে যে চার্ট ব্যবহার করা হয় তার মাধ্যমে হিস্টোরিকাল ডাটা সবচেয়ে ভাল উপস্থাপন করা যায়। আপনি ট্রেন্ড এবং প্যাটার্ন বোঝার জন্য চার্টে পূর্বের ডাটা গুলো দেখতে পারেন যা কিনা আপনাকে মার্কেট সম্পর্কে ভালো আইডিয়া পেতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু টেকনিকাল এনালাইসিস বিষয়টা পুরোপুরি নির্ভর করে আপনার নিজের উপর অর্থাৎ আপনি কিভাবে এনালাইসিস করেন তার উপর এককথায় বিষয়টা পুরোপুরি সাবজেক্টিভ

উদাহরণ স্বরূপঃ জন ও স্মিথ একই চার্ট দেখে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে এনালাইসিস করে মার্কেট পূর্বাভাস করতে পারে। এখন আপনি যখন টেকনিকাল এনালাইসিসের কথা বলবেন তখন আস্তে আস্তে বিভিন্ন টুলসের সাথে পরিচিত হবেন। যেমন RSI (Indicator), Moving Average, Fibonacci, Elliot wave theory, সবগুলো আপনার শিখার দরকার নেই, অনেক ভালো ট্রেডার শুধু সাপোর্ট ও রেসিস্টেন্স লেবেল দেখে ট্রেড করে। এইক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মার্কেট প্রাইস মুভমেন্ট বুঝা এবং তা দেখে নিজের ট্রেডিং স্ট্রাটেজি তৈরি করা। টেকনিকাল এনালাইসিস বিষয়টা শিখার আগে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসের বেসিক জেনে রাখলে মার্কেট বুঝার ক্ষেত্রে টেকনিকাল এনালাইসিসে সবসময় একধাপ এগিয়ে থাকবেন।

ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস কি?

ফরেক্স ট্রেডিং স্কুল
Lesson -7
What is fundamental analysis?
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস কি?

ফরেক্স ট্রেডিং স্কুল এর সপ্তম লেসনে আপনাকে স্বাগতম। এই লেসনে জানবেন ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস কি? এবং প্রফেশনাল ট্রেডাররা কিভাবে এটি ট্রেডিং এর সময় ব্যবহার করে। সেই সাথে বিস্তারিত জানবেন বিভিন্ন ইকোনোমিক রিপোর্টস কিভাবে কারেন্সি মার্কেট এ প্রভাব ফেলে। ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস বলতে একটি দেশের সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক অবস্থা কিরকম এবং এর ফলে কারেন্সি এর উপর কি প্রভাব পড়ে তা বুঝায়। কোন দেশের ইকোনোমিক অবস্থা কেমন তা জানার জন্য কিছু ইনডিকেটরস থাকে যেমন জিডিপি, মানি সাপ্লাই, সিপিআই CPI (Consumer Price Index), PPI (Producer Price Index), Inflation, Unemployment এই সব Indicator এর তথ্য রিপোর্ট আকারে সঠিক সময় পর পর Weekly, Monthly, Quarterly প্রকাশ করা হয়। রিপোর্ট দেখে যদি মনে হয় অর্থনৈতিক ভাল করছে তবে বিদেশি বিনিয়োগ কারীরা একে বিনিয়োগ করার একটি ভাল সুযোগ মনে করতে পারে। ফলে ঐ দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে কিন্তু বিনিয়োগ করার আগে বিদেশি বিনিয়োগ কারীদের অবশ্যই ক্যাপিটাল ঐ দেশের মুদ্রায় কনভার্ট করে নিতে হবে। অর্থাৎ ঐ দেশের মুদ্রার চাহিদা বেড়ে যাবে। এই কারনে অর্থনৈতিক রিপোর্ট  দেখে যদি মনে হয় কোন দেশের অর্থনৈতিক ভাল অবস্থানে আছে তবে ঐ দেশের কারেন্সির দাম ও বেড়ে যাবে।

উদাহরণ স্বরূপ  ধরাযাক, ইউএসএ এর ইনভেস্টারদের যদি সাউথ আফ্রিকার অর্থনৈতিক রিপোর্ট দেখে মনে হয় যে সাউথ আফ্রিকার অর্থনীতি ভাল করছে তবে তারা সাউথ আফ্রিকার মার্কেটে ইনভেস্ট করার জন্য ইন্টারেস্ট হয়ে পড়বে, তার আগে তাদের ক্যাপিটাল ডলার থেকে র‍্যাণ্ড যা সাউথ আফ্রিকার মুদ্রার নাম তাতে কনভার্ট করে নেওয়া লাগবে এর ফলে র‍্যাণ্ড এর ডিমান্ড ও দাম বেড়ে যাবে। আবার ধরাযাক, সাউথ আফ্রিকার নতুন অর্থনৈতিক রিপোর্ট পাবলিশ হলে দেখা গেল এর অর্থনৈতিক ভালো যাচ্ছে না তখন এর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিজেদের ক্যাপিটাল উইথড্র করে নিয়ে এবং কোন ভালো অর্থনৈতিক দেশে বিনিয়োগ করার জন্য নিয়ে যাবে। এর মানে বিনিয়োগকারীরা র‍্যাণ্ড সেল করে কারেন্সি ডলারে কনভার্ট করে নিতে চাইবে ফলে র‍্যাণ্ড এর দাম এবং চাহিদা দুটোই পড়ে যাবে। ইকোনমিক রিপোর্ট রিলিজ হবার আগে এর ফলে কারেন্সির উপর পজিটিভ বা নেগেটিভ কি প্রভাব পড়বে তা নিয়ে বিভিন্ন পূর্ব অনুমান চলে এই পূর্ব অনুমানের কারনে অনেকে আগে থেকে অবস্থান নিয়ে নেন। অর্থাৎ কারেন্সি পেয়ার বাই/সেল করে দেন।

উদাহরণ হিসেবে ধরাযাক, যদি বেশির ভাগ ট্রেডারই মনে করেন এবার সাউথ আফ্রিকার ইকোনমিক রিপোর্ট ভালো যাবে না বা নেগেটিভ হবে তখন বেশির ভাগ ট্রেডারই র‍্যাণ্ড সেল করে দিবে এর ফলে ইকোনমিক রিপোর্ট রিলিজ হবার আগেই র‍্যাণ্ড এর দাম আরও কমে যাবে এই ঘটনাকে বলা হয় প্রাইজড ইন অর্থাৎ রিপোর্ট বা ঘটনা ঘটার আগেই মার্কেটে এর প্রভাব পড়ে গেছে। যদি নিউজ রিলিজের পর অ্যাকচুয়াল রিজাল্ট এবং এক্সপেক্ট রিজাল্ট ভিন্ন হয় তবে মার্কেট এ বড় ধরনের প্রভাব পড়ে মার্কেট ভীষণ ভোলাটাইল হয়ে উঠে কারণ বেশির ভাগ ট্রেডারই তখন বুঝতে পারে না কারেন্সির পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নিলে ভাল করবেন। আপনি যদি নতুন ট্রেডার হয়ে থাকেন তবে কখনোই রিপোর্ট রিলিজের আগে ও পরে ট্রেড করবেন না। পরে সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞ হলে নিজস্ব কোন স্ট্রাটেজি ব্যবহার করে নিউজ ট্রেড করতে পারেন। সুতরাং ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস হচ্ছে কোন দেশের ইকোনমি অবস্থা এনালাইসিস করে কারেন্সির উপর কি প্রভাব পড়ে তা নির্ধারণ করার চেষ্টা করে। কোন দেশের ইকোনমি যদি হতে থাকে তবে স্বাভাবিক ভাবে ধরা যায় এই কারেন্সির ভ্যালু ও বাড়তে থাকবে। 

মেটাট্রেডার কি?

ফরেক্স ট্রেডিং স্কুল
Lesson - 6
What is metatrader?
মেটাট্রেডার কি?

আগের লেসনে বলেছিলাম ডেমো অথবা রিয়েল ট্রেডিং করার আগে আপনার একটি সফটওয়্যার এর প্রয়োজন হবে যার নাম মেটাট্রেডারযেটাকে ফরেক্স এর ভাষায় বলা হয় ট্রেডিং টার্মিনাল। প্রায় সব ব্রোকারই মেটাট্রেডার ব্যবহার করে। টার্মিনালটি আপনার কম্পিউটারে ইন্সটল করার পরই আপনার অ্যাকাউন্ট রেডি করে লগইন দিয়ে ট্রেডিং শুরু করতে পারবেন। নিচের লিংক থেকে খুব সহজেই মেটাট্রেডার ডাউনলোড করতে পারবেন। http://www.metatrader4.com

প্রথমে মেটাট্রেডার ডাউনলোড ফর পিসি লিংকে ক্লিক করুন ডাউনলোড হবার পর পিসিতে ইন্সটল করুন আপনি চাইলে স্মার্ট ফোনেও ট্রেড করতে পারবেন তার জন্য এন্ড্রোইড টার্মিনাল ডাউনলোড করুন। আপনার পিসিতে মেটাট্রেডার৪ টার্মিনালটি ইন্সটল করার পর মেটাট্রেডারের ডানপাশে কারেন্সি পেয়ার লিস্ট দেখতে পাবেন। এবং বিভিন্ন কারেন্সিতে ট্রেড নামাতে পারবেন।

ইন্টারনেটে মেটাট্রেডার নিয়ে বিস্তারিত অনেক আলোচনা রয়েছে এবং এর উপর অনেক টিউটোরিয়াল আছে আপনি চাইলে সার্চ করে দেখতে পারেন। নিজে নিজে ডেমো ট্রেড করবেন, যতবেশি ডেমো ট্রেড করবেন ততবেশি এক্সপার্ট হয়ে উঠবেন। ডেমো ট্রেডিং এ যতপারেন ভুল করুন। কারন ভুল না করলে কখনোই শিখতে পারবেন না। 

ডেমো ট্রেড কি?

ফরেক্স ট্রেডিং স্কুল
Lesson -5
What is Demo Trade?  
ডেমো ট্রেড কি?

আগের লেসন গুলোতে দেখেছেন ফরেক্স কি এবং কিভাবে কাজ করে? পিপস, পেয়ার ও লিভারেজ কি? সুতরাং ধরাযায় যে, আপনি ফরেক্স সম্পর্কে মোটামুটি জানেন কিন্তু প্রাকটিক্যাল্লি ট্রেড করতে না পারায় অনেক বিসয় এখনও ক্লিয়ার না। তাই শুরুতে ইনভেস্ট করতে ভয় পাচ্ছেন কারন না বুঝে ট্রেড করতে গেলে লস হবার সম্ভবনাই বেশি। আপনি যদি নতুন ট্রেডার হয়ে থাকেন তবে আপনার জন্য সুখবর হচ্ছে আপনি কোন ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই ফরেক্স ট্রেডিং করতে পারবেন এর জন্য আহামরি কোন কিছুরই দরকার নেই শুধু একটি কম্পিউটার অথবা স্মার্ট ফোন ও সাথে ভালো ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই আপনি ট্রেডিং এর জন্য তৈরি। নতুন ট্রেডারদের ট্রেডিং শিখানোর জন্য সব ব্রোকারই ডেমো ট্রেডিং এর ব্যবস্থা রাখেন। ডেমো অ্যাকাউন্ট মানে হচ্ছে যেখানে রিয়েল অ্যাকাউন্ট এর মতই সকল সুযোগ সুবিধা থাকে কিন্তু এখানে কোন রিয়েল টাকা থাকেনা। ডেমোতে সব ভার্চুয়াল মানি থাকে। ডেমো অ্যাকাউন্টে আপনি লস করতে পারেন ইচ্ছামত, প্রাকটিস এবং এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী। এমনকি পুরো অ্যাকাউন্ট ব্যাল্যান্স জিরো করতে পারেন কোন সমস্যা নেই। এটা শুধুমাত্র আপনার ট্রেডিং দক্ষতা এবং স্কিল বাড়ানোর জন্য ভাল পদ্ধতি। মনে রাখবেন রিয়েল ট্রেডিং শুরু করার আগে মিনিমাম ২ মাস ডেমো ট্রেডিং প্রাকটিস করবেন। ডেমো ট্রেডিং করার পর আপনার যখনই মনে হবে যে আপনি মার্কেট ট্রেন্ড বুঝতে পারছেন এবং প্রফিট করে যাচ্ছেন, তখন আপনি রিয়েল অ্যাকাউন্টে ইনভেস্ট করে ট্রেডিং করতে পারবেন। ডেমো ট্রেডিং করার জন্য আপনার দরকার হবে একটা সফটওয়্যার যার নাম হল মেটাট্রেডার৪ এটা সব ব্রোকারে ফ্রি পাওয়া যায়। এ সম্পর্কে পরবর্তী লেসনে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 

লিভারেজ কি?

ফরেক্স ট্রেডিং স্কুল
Lesson -4
What is leverage?  
লিভারেজ কি?

যখন কেউ কোনো ব্যবসায় বিশেষ করে ফাইনান্সিয়াল মার্কেটে বিনিয়োগ করার চিন্তাভাবনা করে তখন প্রথমেই যে বিষয়টি সামনে চলে আসে তা হচ্ছে বড় পুঁজি। অল্প পুঁজিতে যে কোন ব্যবসা শুরু করা কঠিন এবং অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবসায় টিকে থাকা অসাধ্য। এ কথাটি শেয়ার মার্কেট বলেন, বন্ড মার্কেট বলেন অথবা আবাসন শিল্প বলেন সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু ফরেক্স মার্কেট এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম, লিভারেজ নেওয়ার সুবিধার কারনে এখানে কম পুঁজিতে বড় ধরনের ট্রেড করা অনেক সহজ।

লিভারেজ বলতে সাধারণত যা বোঝায় তা হচ্ছে, যা আপনার ইনিশিয়াল ইনভেস্টমেন্ট তার চাইতে কয়েকগুণ বড় এমনকি শতগুণ বড় ট্রেড আপনি ওপেন করতে পারবেন। লিভারেজ কিভাবে ফরেক্স ট্রেডে প্রভাব ফেলে তা নিয়ে মূল আলোচনা। আপনি যেহেতু ফরেক্স এ ইনভেস্ট করবেন তাই আপনার ইউএস এর অর্থনৈতিক খবর সবসময় রাখা লাগবে আর রিয়েল এস্টেট ইউএস এর অর্থনীতিতে সবসময় বড় ধরনের ভুমিকা রাখে তাই বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য ইউএসএ এর রিয়েল এস্টেট বা আবাসন শিল্পের কথা চিন্তা করা যাক।

ধরাযাক, আপনার কাছে $২০,০০০ আছে কিন্তু আপনি একটি প্রোপার্টি কিনতে চান যার বাজার মূল্য $১০০,০০০ তো আপনি লোন অথবা মরগেজ নেওয়ার জন্য ব্যাংকে যান, ব্যাংক আপনাকে বলে যে আপনি বর্তমান মূল্যে ২০% অর্থাৎ $২০,০০০ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে বাড়ির মালিকানা পেতে পারেন, এটি রিয়েল এস্টেট এ লিভারেজ ব্যবহারের উদাহরণ।

আপনি ৫:১ লিভারেজ ব্যবহার করে প্রোপার্টিটির মালিকানা লাভ করেছেন। কারন $২০,০০০ ডাউন পেমেন্ট হচ্ছে $১০০,০০০ এর পাঁচ ভাগের এক ভাগ। ধরাযাক, একবছর পর আবাসন খাতের প্রবৃদ্ধির ঘটে এবং প্রোপার্টিটির দাম বেড়ে হয় $১৪০,০০০ এখন আপনি প্রোপার্টি সেল করে দিলেই আপনার লাভ হয় $৪০,০০০ আপনি যদি ব্যাংক লোন না নিতেন শুধু নিজের $২০,০০০ ব্যবহার করতেনতবে এই প্রোপার্টিটি কখনোই কিনতে পারতেন না। এর চাইতে কম দামে প্রোপার্টি কিনতে হতো এখন দেখা যাক ফরেক্স এর ক্ষেত্রে আপনি কিভাবে লিভারেজ ব্যবহার করতে পারেন।

ধরাযাক, ইনভেস্ট করার জন্য আপনার পুঁজি রয়েছে $১০০০ কিন্তু আপনি সিদ্ধান্ত নেন $১০০,০০০ সমমান মূলের USD/JPY  ট্রেড করার ৭৭.৭০ এক্সচেঞ্জরেট এ যেহেতু $১০০০ হচ্ছে $১০০,০০০ এর ১০০ ভাগের এক ভাগ তাই আপনার এই ক্ষেত্রে যে লিভারেজ ব্যবহার করা লাগবে তার পরিমাণ ১০০:১ অর্থাৎ আপনার লিভারেজ এর পরিমাণ প্রতি $১ এর বিপরীতে $১০০ এখন USD/JPY  দাম বেড়ে হয় ৭৭.৮০ (১০পিপস)

পিপস ভ্যালু ক্যালকুলেশন ফর্মুলা ব্যবহার করে আপনি দেখতে পারেন আপনার টোটাল লাভের পরিমাণ $১২৮.৭ লিভারেজ ১০০:১ ব্যবহারের ফলে আপনি যদি লিভারেজ ব্যবহার না করতেন আপনার লাভের পরিমাণ হত ১.২৮ ইনফ্যাক্ট ফরেক্স এ আপনি বিভিন্ন মাত্রায় লিভারেজ ব্যবহার করে অল্প পুঁজিতে অনেক বড় বড় ট্রেড ওপেন করতে পারবেন। কিন্তু মাথায় রাখবেন উচ্চ লিভারেজ যেমন আপনার লাভের পরিমাণ বাড়িয়েদেয় ঠিক তেমন আপনার লসের পরিমাণও বাড়িয়েদেয়। যেমন আগের উদাহরণে আপনি যদি ১০ পিপস লাভ না করে লস করতেন তবে আপনার লসের পরিমাণ হত $১২৮.৭ অর্থাৎ লিভারেজ সব সময় দুইদিকেই কাজ করে ব্যবহার করতে না জানলে নিজেকেই কেটে ফেলবেন। এই কারনেই নতুন ট্রেডারদের সবসময় উচিত জেনে শুনে এবং সঠিক রিস্ক ম্যানেজমেন্ট স্ট্রাটেজি ব্যবহার করে ট্রেড করা


পিপস কি?

ফরেক্স ট্রেডিং স্কুল
Lesson -3
What is Pips?  
পিপস কি?

একজন সফল ফরেক্স ট্রেডার হওয়ার জন্য যে সব বিষয় আগে জানার দরকার তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পিপস কি? পিপ এর এলাবোরেশন করলে যা দাড়ায় তাহচ্ছে Percentage in Point এর অর্থ যে কোন এক্সচেঞ্জ রেটে দামের ভগ্নাংশে ক্ষুদ্রতম এককের পরিবর্তন। এটি সাধারণত দশমিকের পর চতুর্থ সংখ্যার পরিবর্তনকে বুঝায় যেমন GBP/USD  এর বর্তমান এক্সচেঞ্জ রেট হচ্ছে ১.২৩২৯ আর এই পিপস উঠা-নামার জন্য ফরেক্সে লাভ বা লস হয়ে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যাতিক্রম দেখা যায়, যেমন USD/JPY এবং কিছু কিছু কমোডিটিস যেমন গোল্ড, ওয়েল, এবং গ্যাস।

উদাহরণ স্বরূপ ধরাযাক, GBP/USD এর বর্তমান এক্সচেঞ্জ রেট হচ্ছে ১.২৩২৯ এবং তা বেড়ে হল ১.২৩৩০ এই ক্ষেত্রে পিপস এর ব্যবধান ১ কারন পিপস গণনার জন্য দশমিকের পর চতুর্থ সংখ্যা ধরা হয়েছে। আবার ধরাযাক, USD/JPY  এর ক্ষেত্রে বর্তমান এক্সচেঞ্জ রেট হচ্ছে ১১৬.৭৪ এবং তা বেড়ে হল ১১৬.৭৫ এই ক্ষেত্রেও পিপস এর ব্যবধান ১ কারন পিপস গণনার জন্য দশমিকের পর দ্বিতীয় সংখ্যা ধরা হয়েছে।

কারেন্সি পেয়ার কি?

ফরেক্স ট্রেডিং স্কুল
Lesson -2
What is Currency Pair?  
কারেন্সি পেয়ার কি?

ফরেক্স মার্কেটে আপনি কারেন্সি পেয়ার বাই অথবা সেল করতে পারবেন। আপনি যখন কোন কারেন্সি পেয়ার ট্রেড করার সিদ্ধান্ত নিবেন তখন আপনি যা দেখতে পান তা হচ্ছে কারেন্সি পেয়ার গুলোর কিছু সিম্বল যা ট্রেড করার জন্য সব সময় রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে আপনি যদি ব্রিটিশ পাউন্ড বা GBP এর বিপরীতে ইউএস ডলারে বা USD ট্রেড করতে যান তখন যা দেখবেন GBP/USD (£)পাউন্ড, ($)ডলার সিম্বল অর্থাৎ কারেন্সি পেয়ার মানে হচ্ছে দুইটা কারেন্সির অনুপাত। এই অনুপাতের প্রথম যে কারেন্সি তাকে বলা হয় বেস কারেন্সি আর দ্বিতীয় কারেন্সিকে বলা হয় কাউন্টার কারেন্সি এখানে বেস কারেন্সি হচ্ছে ব্রিটিশ পাউন্ড GBP  এবং কাউন্টার কারেন্সি ইউএস ডলার USD

ফরেক্সে যে পেয়ার গুলো সবচেয়ে বেশি ট্রেড হয় তা মেজর পেয়ার নামে পরিচিত এর ভিতরে পরে EUR/USD, GBP/USD, AUD/USD, NZD/USD, USD/CHF, USD/JPY, USD/CAD আপনি খেয়াল করে থাকবেন এই পেয়ারর গুলোর সব গুলোর মধ্যে USD  রয়েছে। ফরেক্স মার্কেটের আনুমানিক ৮৫% ট্রেডিং এই মেজর পেয়ার গুলোর মাধ্যমে হয়ে থাকে এবং বেশি ভলিউমে ট্রেডিং ও হাই লিকুইডিটির কারনে এই সব কারেন্সি পেয়ারের দাম সবসময় অস্থিতিশীল থাকে এবং খুব বেশি উঠা-নামা করে। এই কারনে এই সকল কারেন্সি পেয়ার ট্রেডিং এ অনেক সুবিধা থাকে কিন্তু সেই সাথে ঝুঁকিও অনেক বেশি থাকে। মেজর কারেন্সি পেয়ার ছাড়াও আপনি অনেক কারেন্সি পেয়ারে ট্রেড করতে পারেন যা ক্রস পেয়ার নামে পরিচিত। ক্রস পেয়ার গুলোতে USD থাকে না। কিন্তু অন্য প্রধান কারেন্সিগুলো থাকে। যেমন GBP/CHF, EUR/CHF, EUR/JPY, NZD/JPY, CAD/JPY মেজর ও ক্রস পেয়ার বাদ দিলে শেষে যে পেয়ারগুলো থাকে সেগুলোকে বলা হয় Exotics পেয়ার। Exotics পেয়ার গুলোতে প্রধান কারেন্সির সাথে পরিপূরক হিসেবে কোন emerging market এর কারেন্সি থাকে। যেমন EUR/HKD, EUR/ZAR, USD/MXN, USD/SGD, USD/ZAR  এখানে অল্প কিছু পেয়ারের নাম পেয়েছেন আপনি ট্রেডিং শুরু করার সাথে সাথে আরো অনেক পেয়ারের সাথে পরিচিত হবেন।

ফরেক্স কি? এবং কিভাবে কাজ করে?

ফরেক্স ট্রেডিং স্কুল
Lesson -1
What is Forex and how to work?  
ফরেক্স কি? এবং কিভাবে কাজ করে?

ফরেক্স হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম একটি উত্তেজনাপূর্ণ ও গতিশীল আর্থিক বাজার। ফরেক্স বা কারেন্সি ট্রেডিং বলতে সোজা কথায় বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রার ক্রয় বা বিক্রয় করাকে বুঝায়। প্রতিমুহূর্তে বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রার যে লেনদেন হচ্ছে তার আন্তর্জাতিক বাজার হচ্ছে ফরেক্স। আপনি যদি ইতিমধ্যে কোন বাইরের দেশে ভ্রমণ করে থাকেন তাহলে আপনি ইতিমধ্যে ফরেক্স ট্রেডিং এ অংশ গ্রহণ করে ফেলেছেন।

উদাহরণ স্বরূপঃ ইউএস বা আমেরিকাতে ভ্রমণ করার সময় সে দেশে খরচ করার জন্য টাকার বিনিময় ডলার ক্রয় করেছেন। কিন্তু অনলাইন ফরেক্স এর সাথে তফাৎ হচ্ছে অনলাইন ফরেক্স এ আপনাকে কোন ফিজিক্যাল কারেন্সি বাই বা সেল করতে হয় না। ফরেক্স মার্কেটের বায়ার/সেলার হতে পারে কোন ব্যাংক/ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান/অথবা আপনার বা আমার মত কোন সাধারণ ব্যক্তিআপনার মনে প্রশ্ন থাকতে পারে যে বিষয়টি কি ভাবে ঘটে? সবার আগে মনে রাখবেন ফরেক্স এ আপনি কারেন্সি পেয়ার/জোড় আকারে বাই বা সেল করতে পারবেনঅর্থাৎ একটি কারেন্সি বাই করার সাথে সাথে এর কাউন্টার কারেন্সি সেল করবেনআপনি হয়তো জানেন যে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার এক্সচেঞ্জ রেট সর্বদাই পরিবর্তনশীল। আবার টিভি নিউজে দেখে থাকবেন যে কখনো ইউএস ডলার টাকার বিপরীতে শক্তিশালী হচ্ছে আবার কখনো টাকা ইউএস ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হচ্ছে। এ রকম পৃথিবীর অধিকাংশ মুদ্রার বিপরীতে হয়-

উদাহরণ স্বরূপঃ EUR/USD পেয়ারের কথা ধরাযাক, আগেই বলেছি একটি কারেন্সি বাই করার সাথে সাথে এর কাউন্টার কারেন্সি সেল হয়ে যায়। এখন আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে EUR বাই করবেন এবং USD সেল করবেন। এখন বিভিন্ন মার্কেট ফোরস এর কারনে EUR এর দাম USD এর বিপরীতে বেড়ে গেল তখন ট্রেডটা ক্লোজ করার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং EUR সেল করে দিলেন এখন EUR এর দামের যে ব্যবধান হল তাই হল আপনার লাভ।

ধরা যাক, আপনার কাছে ১০০ USD আছে যা বিক্রয় করে আপনি ৮০ EUR ক্রয় করেছেনবিভিন্ন মার্কেট ফোরস এর কারনে EUR এর দাম বাড়ার পর তা বিক্রয় করে আপনি ১৩০ USD পেলেন, এভাবে আপনি ফরেক্স মার্কেট থেকে আয় করতে পারেন। অর্থাৎ, কারেন্সির মূল্যবৃদ্ধি বা মূল্যহ্রাস এর ফায়দা তুলে লাভ করতে পারেন। ফরেক্স মার্কেটের আরেকটি সুবিধা হল ইন্টারনেট কানেকশান থাকলে আপনি নিজের অ্যাকাউন্টে লগইন করে যে কোন সময়, যে কোন জায়গা থেকে ট্রেড করতে পারেন। তা হতে পারে আপনার অফিস/বাসা অথবা আপনার মোবাইল ফোন।

ফরেক্স এর বিশালতার জন্য ফরেক্স মার্কেট সপ্তাহে পাঁচ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। এই সকল বৈশিষ্ট্যের কারনে ফরেক্স বিশ্বের অন্যতম ট্রেডিং মার্কেট এবং এখানে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, তাই ফরেক্স ট্রেডিং হতে পারে আপনার বেস্ট ক্যারিয়ার চয়েস। কিন্তু অল্প বিদ্যা সব সময় ভয়ংকর হয়, অন্যান্য ব্যবসার মত ফরেক্স ট্রেডিং এও ঝুঁকি থাকে। তাই সব সময় নতুন ট্রেডারদের জন্য বলি তাড়াহুড়া না করে শিখতে থাকুন। আর নলেজ লেভেল বাড়াতে থাকুন।