প্রায় ২০০ খ্রিস্টাব্দের কথা ঈসা (আঃ) এর আগমনের দুই শতাব্দী পরেও যখন ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ তাল্মুদ সংকলনের কাজ চলছিল,
তখন কার কথা। ইহুদীদের ৭টি পবিত্র দিন ফিস্টের সময় গুলোতে ইসরাইলের জেরুজালেমের টেম্পলস কোর্ট অফ দ্যা জেন্টাইলসের কাছে কিছু লোককে বসে থাকতে দেখা যেত। কিছু কমিশনের বিনিময়ে এই লোকগুলো উৎসবে আগত মানুষদেরকে মুদ্রা পরিবর্তন করে দিত। ইতিহাস বলছে,
মুদ্রা পরিবর্তন থেকেও যে লাভ করা যায়,
এমন ধারনার সূচনা এখান থেকেই সর্বপ্রথম এসেছে। চতুর্থ খ্রিষ্টাব্দেতো পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের সরকার কারেন্সি এক্সচেঞ্জ এর জন্য একটি প্রতিষ্ঠানই চালু করেছিল। শুধুমাত্র ওই প্রতিষ্ঠানটিই মুদ্রা পরিবর্তন করতে পারত বলে তা সরকারের মনোপলি ব্যবসায় পরিণত হয়েছিল।
"এত এত বছর আগে মানুষের কি দরকার পড়ত মুদ্রা পরিবর্তনের? আর তখনকার দিনে মুদ্রা পরিবর্তনের রেটই বা কিভাবে নির্ধারিত হত?"
তখন কার মানুষও কিন্তু ব্যবসার প্রয়োজনে একদেশ থেকে অন্য দেশে যেত। স্বভাবতই, একদেশের মুদ্রা অন্যদেশে আর কাজ করতনা। তাই, দেশত্যাগের পূর্বে মানুষ স্বর্ণ বা রুপা কিনে নিয়ে তা অন্য দেশে বিক্রি করে ওই দেশের কারেন্সি কিনে নিত। আর এই বিড়ম্বনা দূর করার জন্যই কমিশনের বিনিময়ে কিছু লোক সরাসরি একদেশের মুদ্রাকে অপর দেশের মুদ্রায় পরিবর্তন করে দিত। আর দর নির্ধারিত স্বর্ণ বা রুপার বিনিময়ে কোন দেশের মুদ্রা কত খানি পাওয়া যায়, তার ভিত্তিতে। এরও ১০০০ হাজার বছরেরও বেশি সময় পর্যন্ত তেমন কোন বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেনি মুদ্রা পরিবর্তন বাজারে। এর জন্য দরকার ছিল একটি শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থার।
ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নয়নে পৃথিবীতে সবচেয়ে ভূমিকা রেখেছে ইতালিয়রা। ১৪শ শতাব্দীতে ইতালীর বিভিন্ন প্রভাবশালী ধনী পরিবার অনেক গুলো ব্যাংক ওপেন করে। এগুলোর মধ্যে ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় বোধহয় ১৩৯৭ সালে মিদিচি পরিবার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মিদিচি ব্যাংক, যা প্রায় ১০০ বছর টিকে থাকে। এই পরিবারটি কত ধনীছিল, তা বোঝানোর জন্য একটি বাক্যই যথেষ্ট। একটি নির্দিষ্ট সময় জুড়ে পুরো ইউরোপের সবচেয়ে সম্পদ শালী পরিবার ছিল মিদিচি পরিবার।
১৪৭২ খ্রিষ্টাব্দে আরেকটি বড় ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ইতালির তুস্কানীতে। মন্টে দেই পাস্কি দি সিয়েনা নামের এই ব্যাংকটি কিন্তু আজও টিকে আছে। শুধুতাই নয়, এটি বর্তমানে ইতালির তৃতীয় বৃহত্তম ব্যাংক এবং টিকে থাকা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম ব্যাংক।
No comments:
Post a Comment